🔴 আজ আমি শেয়ার করবো এই পেজ এর টিম আমাদের একটা অসম্ভব কাজ একদিনে কিভাবে সম্ভব করলো , এত দিন দেখে এসেছি বাপ কে বলো পেজ অমুক এর ওই করেছে তাই করেছে ....কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে আরো জটিল কাজ একদম সময় না নিয়ে কিভাবে যে জাদুর মত হয়ে গেল এখনো হিসেব মেলাতে পারছিনা ...! যাই হোক আমার সেই অসম্ভব এক্সপেরিয়েন্স না শেয়ার করে পারছিনা, সবাইকে অনুরোধ করছি পুরো টা পড়তে ,তবেই বুঝতে পারবেন...!

🔴 সমস্যা টা একটু ক্লিয়ার না করে বললে বুঝতে অসুবিধা হতে পারে, আমরা দক্ষিণ 24 পরগনার ,উস্থি থানার অন্তর্গত একটি গ্রামের বাসিন্দা। আমার বোন 2020 সালে উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছিল ,তার পরে আর কলেজ ভর্তি হয়নি কারন ফেব্রুয়ারি 2020 তে বিয়ে হয়েছিল, বিয়ের কিছুদিন পরে উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েছিল শশুরবাড়ির লোকজন আর ভর্তি করেনি ! পরবর্তী সময়ে বোনের সংসার চালাকালীন বিভিন্ন ডিমান্ড নিয়ে চাপ দিতে থাকে ও নির্যাতিত হতে থাকে। বিভিন্ন কারণে বোনের সংসার জীবন কন্টিনিউ হয়নি, সে এক দীর্ঘ ইতিহাস।

🔴 এই বছর সব কিছু ছেড়ে ১৮ ই আগস্ট পর্যন্ত বোনকে কলেজে ভর্তি করার জন্য ডকুমেন্ট এর ফাইল এর জন্য শশুরবাড়ির সবাইকে রিকোয়েস্ট করতে থাকি, কিন্তু তারা ইচ্ছাকৃত ভাবেই দিলোনা। ফলে একটি মেয়ের জীবন নষ্ট হওয়ার সাথে সাথে ভবিষৎ কেরিয়ার ও নষ্ট হওয়ার পথে দাঁড়িয়ে যায়। 

🔴 এমন অবস্থাতে আমরা সব ভুলে কলেজ ভর্তির জন্য দুশ্চিন্তা তে পড়ি, আমাদের কাছে কিছুই ডকুমেন্ট নেই না অরিজিনাল না জেরক্স! দিশেহারা বোন ও ডিপ্রেশন এ তখন, আবারও একটা বছর নষ্ট হয়ে যাবে ...!!! 

🔴 এমন অবস্থা তে বাপ কে বলো পেজ এর মূল উদ্যোক্তা সাগীর দা কে ১৮ ই আগস্ট ফেসবুক এ মেসেজ করি। সমস্যার কিছু কথা ও ভর্তির আবেদন এর 20 তারিখ লাস্ট ডেট কোনো ডকুমেন্ট নেই কিছু একটা করুন জাস্ট এতটুকু তৎক্ষণাৎ আমার ফোন নম্বর নিলো সাগীর দা ।

🔴 কিছুক্ষন এর মধ্যে #বাপকেবলো পেজ থেকে একটা দিদি ফোন করে ,আমি প্রায় 2 মিনিট মতো কথা বলি , দিদি সব শুনে ফোন কেটে দেয়,কিছুক্ষন পরে কল ব্যাক করে বলেন আমরা উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ড এর নতুন সভাপতি স্যার কে বলেছি ব্যাপারটা, এখনই থানা তে চলে যাও ওখানে একটা জিডি করাও আগে, সময় নষ্ট না করে বোন কে নিয়ে দুপুরে বেরিয়ে পড়ি । 

🔴 থানা তে গেলাম, একটা দরখাস্ত লিখলাম ডকুমেন্ট হারিয়ে  যাওয়া নিয়ে  জিডি করার জন্য, গিয়ে ডিউটি অফিসার কে বললাম উনি বললেন এভাবে হয়না জিডি,স্কুল থেকে কিসব যেন ফর্মালিটি আছে লিখে আনতে হবে সেগুলো। আমরা ২ জন এক প্রকার হটাত হয়ে পড়লাম। যা রুলস ফর্মালিটি ডুপ্লিকেট ডকুমেন্ট বের করার জন্য তা তো অনেক দিন সময় লাগবে ,আর আমাদের সময় মাত্র মাঝে একদিন। 😢 

🔴 রীতিমতো থানা থেকে ফোন করে পেজ এর দিদি টাকে সব বললাম ,আনমনা হয়ে রোড ধরে আমি আর বোন হাঁটতে থাকি বাড়ির উদ্দেশ্য ! মিনিট 5 এর মধ্যে পেজ এর দিদি কল করে আমাকে বলে বাড়ি যেওনা থানা তে যাও। ওনারা ডিরেক্ট হেড অফিসার কে ফোন করছে , কথামত থানা তে গেলাম, বাইরে অপেক্ষা করছিলাম আশ্চর্য সব ঘটনা ঘটতে লাগলো। ওসি স্যার নিজে বেড়িয়ে এলেন, বললো কারা রেজাল্ট এর পেপারস রিলেটেড জিডি করতে এসেছেন? আমরা গেলাম, ওসি স্যার আদেশ করলেন এদের জিডি টা করে দাও! কথা মত সেই ডিউটি অফিসারই জিডি করে দিলেন।

🔴 জিডি হয়ে যেতেই দিদির কথা মত উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ড এর প্রেসিডেন্ট স্যার কে অ্যাড্রেস করে একটা দরখাস্ত লিখে আর জিডি এর পিক তুলে পিডিএফ করে ওনাদের কে WhatsApp এ সেন্ড করতে বললেন, আমি তাই করলাম .(সত্যি বলছি যেভাবে সাথে থেকে আমাদের কে গাইড করছিল সত্যি কান্না লাগছিল যে কাউকে পাশে পাচ্ছি বোনের কেরিয়ার বাঁচানোর জন্য...‼️)। তারপরে সন্ধ্যার দিকে আবার দিদি ফোন করে বললো তোমাদের কাজ টা কালকে (১৯শে আগস্ট) হয়ে যাবার চান্স আছে, তোমাদের সব ডকুমেন্ট পৌঁছে দেওয়া হয় গেছে ✅

🔴 ১৮ই আগস্ট  রাত ১০  টার  পরে, Tapas Kumar Mukherjee ( Secretary In Charge W.B. Council of H.S. Education) আমাকে ডিরেক্ট ফোন করে  বললেন তোমার বোনের রেসাল্ট এর ব্যাপারে কাল (১৯শে আগস্ট) সকাল ১১:৩০ নাগাদ বিদ্যাসাগর ভবনে আসুন! আমি সঙ্গে সঙ্গে পেজ এর দিদি কে ফোন করে জানিয়ে দিই।

🔴 ১৯ শে আগস্ট একদম সকাল বেলা বাড়ি থেকে বের হয় বিদ্যাসাগর ভবন (WBCHSE Board) এর উদ্দেশে ১১ am এ পৌঁছে যায় ! পেজ এর দিদি ফোন করে মাঝে মাঝে খবর ও নিচ্ছিল ....!

🔴 ওখানে প্রথমে গেলাম তার পরে যে যে ডকুমেন্ট হারিয়েছে তার জন্য ফর্ম তুললাম। স্টাফ গুলো বললো এগুলি নিয়ে স্কুল থেকে Sign,স্ট্যাম্প করে নিয়ে আসতে ,ফর্মালিটি টা বললো আর কি ! আমরা কি করলাম পেজ এর দিদি কে বললাম উনারা রিকোয়েস্ট করতে বললেন ! সমস্যা হলে জানাতে বললেন ।

🔴 আমি কি করলাম ডিরেক্ট সেক্রেটারি Tapas Kumar Mukherjee -স্যার কে ফোন করলাম ,উনি ডিরেক্ট ওনার অফিসে যেতে বললেন 3rd ফ্লোর এ (যে মানুষ টার কাছে পৌঁছাতে 3 টে সিকুরিটি কে কৈফিয়ত দিতে হয় ) ওনার অফিসে আমাদের ঢোকার পারমিশন দিয়ে দিল মানে উনি নিজে আমাদের কে স্টাফ পাঠিয়ে বাইরে থেকে ওনার অফিসে ডেকে নিলেন, ( এত ভিআইপি ফেসিলিটি পাচ্ছিলাম যেটা এই বাপ কে বলো পেজ এর জন্য সম্ভব হয়েছে)...ওনাকে বেশি কিছু বলতে ও হয়নি ,জাস্ট একটা দরখাস্ত আর জিডি এর উপর বেস করে উনি একদম দায়িত্ব সহকারে সব কিছু নিজেই করে দিলেন যাদের ডাকার ডাকলেন বুঝিয়ে দিলেন (কি বলবো অবাক হচ্ছিলাম 😢) !!মানুষ টার সাথে মিট করার জন্য কত স্কুলের হেড স্যার বাইরে অপেক্ষা করছে উনি সব কিছু ফেলে রেখে এত গুরুত্ব দিচ্ছেন যা আমাদের কাছে অকল্পনীয়🥺😭 ছিল ..💗

🔴 সেক্রেটারি স্যার আমাদের কে ওখান থেকে বিকাশ ভবন পাঠালেন এডমিট আর রেজিস্ট্রেশন যেটা বিকাশ ভবন থেকে দেওয়া হয় ! এবং বললেন ওখান থেকে ওগুলো নিয়ে এসে যাবে, রেসাল্ট সার্টিফিকেট ও এখানে তৈরি হয়ে যাবে ,তাই করলাম !

🔴 বিকাশ ভবন গেলাম, যেখানে আটকে দিচ্ছে ,সেক্রেটারি স্যার কে ফোন করছিলাম কিছুক্ষনের মধ্যে আমাদের সাথে অন্য কিছু ঘটে যাচ্ছে, ভিআইপি এর মত সবাই ডেকে নিচ্ছে। কত ভিড় কত লোক কত কাজ সে সবের মধ্যে আমাদের কাজ টা কেমন একটা জাদুর গতিতে বিনা বাঁধায় হয়ে যাচ্ছে ! বিকাশ ভবন থেকে কিছুক্ষন পরে অ্যাডমিট, রেজিস্ট্রেশন পেয়ে গেলাম ,ওখান থেকে বিদ্যাসাগর ভবন গেলাম রেজাল্ট আর সার্টিফিকেট ও পেয়ে গেলাম ,যেটা বোন হাতে পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে আসছিল ..💓💓💖

🔴 ওখানে যে ফেসিলিটি পেলাম যেটা সারাজীবন মনে থাকবে সেক্রেটারির রুমে অগাধ পাস ,অত ব্যাস্ত মানুষ হয়েও কি সুন্দর ব্যাবহার ,নিজে ও বার বার ফোন করছিলেন, যেটা সারাজীবন হৃদয়ে থাকবে ...💓💗

🔴 আসল কথা যাদের জন্য এই গুলো সম্ভব হলো তাদের কাজে সারাজীবন আমরা ঋণী থাকবো , এরা শুধু একটা মেয়ের একটা বছর নষ্টের হাত থেকে বাঁচায়নি একটা মেয়ের জীবন বাঁচিয়েছে ,ডিপ্রেশন এ ছিল আমার বোন ,প্রচুর ভেঙে পড়েছিল 🥺 এই বাপ কে বলো (BaapKeBolo) পেজ এর কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো!!! দিল থেকে এই পেজের কর্মী দের কে স্যালুট করি 🙏🏻, এত হেল্প করেও এই পেজ এর দিদি বোন কে আশীর্বাদ করেছে পরবর্তী এই পড়াশুনার জীবন টার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছে😍🥰